ক্রীড়া ডেস্ক
৩ ম্যাচ খেলে ১ জয় নিয়ে টি২০ বিশ্বকাপের আসরে পাকিস্তানে মতো প্রতিষ্ঠিত শক্তির পয়েন্ট ২! সেমিতে যেতে হলে আজ জয় চাই-চাই! এমন একটা কঠিন সত্য সামনে নিয়ে মাঠে নেমে টস জিতে ব্যাট হাতে তুলে নিয়ে পাক শিবির ভরাডুবির দরাজয় দাঁড়িয়ে ছিল। অপ্রত্যাশিত দলের তালিকায় বিশ্ব ক্রিকেটে সেরাদের সেরা পাকিস্তান। কখন যে কি ঘটাবে আগাম বলা কঠিণ। সেটা আজ ৪৩ রানে ৪ উইকেটে থেকে ১৮৫/৯ এ প্রমাণ দিয়েছে। বৃষ্টির হানায় দক্ষিণ আফ্রিকা কর্তনকৃত ওভারে টার্গেট ছিল ১৪ ওভারে ১৪২, কিন্তু ৯ উইকেটে ১০৮ রানের বেশি করতে পারেনি। ৩৩ রানের জয়ে পাক শিবির সেমির স্বপ্ন বেঁচে রইল। তবে অনেক সমীকরণের হিসেব থেকেই যাচ্ছে।
৪, ৩৮, ৪০ আর ৪৩ রানে টানা টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটার সাঁজ ঘরে ফেরত গেলেন। তা হলে কি পাক শিবির আজ শত ভাগ ব্যর্থতার সীমানায় পা দেবে? শত রানের আগেই কি অলআউট পাকিস্তান? সেটা হতে দেয়নি ৫ম আর ৬ষ্ঠ জুটি। ১৮৬ রানের টার্গেট দেয় পাকিস্তান।
পাক শিবিরের ভরসা রিদওয়ান আর বাবর এতো দ্রুত আউট হলেন যে হকচকিয়ে গেল পাক ড্রেসিং রুম। সামলাতে খানিকটা সময় তো লেগেছেই। শুরুটা যেভাবে করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকানরা, সেভাবে বোলিংটা ধরে রাখতে পারেনি পাক শিবিরের মিডল অর্ডারের সামনে। নেওয়াজ, ইফতেখার আর শাবাদ -তিন জনেই আফ্রিকান বোলিংকে কাঁটা চেঁড়া করেছে।
৫ম জুটিতে মোহাম্মদ নেওয়াজ আর ইফতেখার আহমেদ মিলে দলের স্কোর ৪৩ থেকে নিয়ে গেলেন ১৩ ওভারে ৯৫ অবদি। নেওয়াজ ২২ বলে ২৮ রানে এলবি’র ফাঁদে কাটা গেলেন। এরপর ৬ষ্ঠ জুটিতে ইফতেখার আর শাবাদ খান হান ধরলেন। স্কোর ১৬ ওভারে ১৩৫/৫ রান। শাবাদ খানের তেঁড়ে ফুঁড়ে মার-মার কাটাকাট ব্যাটিং পাক শিবির অনেকটা শান্ত হয়ে আসে। ৬ষ্ঠ জুটির কল্যানেই পাকিস্তান ১৮৫/৯ পা দিয়ে লড়াই করার সুযোগটা হাতে রাখে। ৩৩ বলে ফিফটির দেখা পেলেন ইফতেখান আহমেদ।
৫ম আর ৬ষ্ঠ জুটি যদি ব্যর্থ হতো তাহলে অল্প রানেই অলআউট পাকিস্তান খেলা শেষ হবার আগেই হেরে যেত। এখন সেটা হচ্ছে না, ১৮৫ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াই করে জয় আয়ত্ব করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত ১৮.৪ ওভারে শাবাদ খান বল আকাশে তুলে দিলেও বল হাতে নিয়েও ফিল্ডার ফেলে দিলেন। কিন্ত ১৮.৫ ওভারে ২২ বলে ৫২ রান করা শাবাদ একই জায়গায় ক্যাচ দিলেন, এবার আর মিস হলো না। শেষ বলে আকাশে তুলে দিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম ক্যাচ আউট। ১৯ ওভারে ১৭৭/৭, এরপর ৩৫ বলে ৫১ রানে থাকা ইফতেখার সীমানায় দাঁড়ানো ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়লেন। ২০ ওভার শেষে আফ্রিকানদের মিস ফিল্ড আর একাধিক ক্যাচ মিসে পাক শিবির স্কোর বোর্ডে জমা করে ১৮৫/৯। ৩৩ রানে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শেষ ম্যাচে পাকিস্তান বাংলাদেশকে হারাতে পারলেই সেমি নিশ্চিত এটা বলার সুযোগ নেই। শেষ ম্যাচে আফ্রিকা কত ব্যবধানে জিতে যায়, সেটার উপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান জিতলেও সেমিতে যাবে কি-না! আফ্রিকানরা যদি শেষ ম্যাচে হেরে যায় তাহল পাকিস্তানের সুযোগ থাকছে। নয় তো সম্ভব না, কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় দল বি গ্রুপে। আর পাকিস্তান রান রেটে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে তৃতীয়।
এছাড়া আরও একটি সুযোগ আছে, যদি ভারত শেষ ম্যাচে হেরে যায় তাহলে ভারতের ৫ ম্যাচে পয়েন্ট ৬-এই আটকে যাবে, পাকিস্তান বাংলাদেশকে হারাতে পারলে পয়েন্ট ৬ হবে। তখন রান রেটের হিসেবটা সামনে আসবে। তবে আপাতত হিসেবে ভারতের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আর দক্ষিণ আফ্রিকার নেদারল্যান্ডসকে হারানোটা স্বাভাবিক ঘটনা। যদি উল্টো কিছু হয় তাহলে হয়তো পাকিস্তানের সুযোগ হতে পারে।